জয়পুরহাট টুয়েন্টি ফোর ডটকম :
আইন উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল বলেছেন, হাইকোর্টে কিছু বিচারক আছেন, তাদের ব্যাপারে আমাদের সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। তারা গত জুলাই গণবিপ্লব চলাকালে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। এ ছাড়া কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় রিপোর্টও ছাপা হয়েছে। এ জন্যই তাদের কে নিয়ে ছাত্র ও জনতার অনেক ক্ষোভ রয়েছে। এ সকল সংক্রান্ত ক্ষোভ সাংবিধানিকভাবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার একটি পথ খুলে গেছে ইতিমধ্যেই।
আমাদের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা বহাল রেখে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা-র (রিভিউ) চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন নিষ্পত্তি করে রোববার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট এর আপিল বিভাগ। এই রায়ের ফলে কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অসমর্থতা ও পেশাগত অসদাচরণের কোনো অভিযোগ উঠলে আমাদের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের পর সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল। পরে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।
এছাড়াও আইন উপদেষ্টা বলেন,দেশের ‘উচ্চ আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন। উচ্চ আদালত তাদের মতো করে ব্যবস্থা নেবেন। তবে আমরা মনে করি, এখন অন্তত ছাত্র-জনতা তাদের অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করার জন্য একটা উপযুক্ত ফোরাম পেল। আমরা এটাকে একটা ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবেই দেখতে চাই।’
উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের বিষয়ে সংবিধানেই বলা আছে। প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুজন বিচারক মিলে এই কাউন্সিল গঠিত হয়। কেউ যদি আজই সেখানে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন, তাহলে সেটির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যখন বাতিল হয়ে ছিল, তখন উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার কোন ফোরাম ছিল না। আবার জবাবদিহি নিশ্চিত করার ইচ্ছাও তৎকালীন উচ্চ আদালতের কোন প্রশাসনের ছিল না। কারণ, তখন তাদের ফরমায়েশি রায় হয়েছিল। আপনারা জানেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কী রকম রায় হয়েছে! এবং তারেক রহমানকে বাংলাদেশে কথাই বলতে দেওয়া হয়নি! বাক্স্বাধীনতা রুদ্ধ করার মতো এমন অবৈধ রায়-ও হয়েছে। এ ছাড়াও দেশের বহু মানুষ তাদের মানবাধিকার রক্ষা করার সুযোগ টুকুও পাননি। বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।’
উপদেষ্টা অধ্যাপক জনাব আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বর্তমানে যাঁরা কর্তৃপক্ষ রয়েছেন, আদালতের জবাবদিহি নিশ্চিত করার সদিচ্ছা তাদের আছে বলে আমি তা বিশ্বাস করি। এবার সেটা বাস্তবায়ন করার ফোরামও পুনরুজ্জীবিত হয়েগেছে। এটিকে আমি ও আমার বিশ্বাস অনেকেই তা ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখবেন।’
আপনার মতামত লিখুন :